ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম এক শ্রেষ্ঠ মণীষী ইব্রাহিম খাঁ৷একই সাথে শিক্ষাবিদ-সাহিত্যিক এবং সমাজ সংষ্কারক ছিলেন প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ’।
অনলাইন ডেক্স:
জন্মগ্রহণ করেন অবিভক্ত বাংলায়,টাঙ্গাইলের বিরামপুর নামক গ্রামে৷বাবার নাম ছিল শাবাজ খান,মা-রতন খানম৷বাড়ির নাম ছিল “দক্ষিণ দুয়ার”!সেই দুয়ারে যেই যেত ,দেখত শেষ বয়সের এক সুদর্শন খাঁ সাহেব নিজের মনে পড়াশুনায় ব্যাস্ত!
তাঁর রচিত ১৩০টি গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ‘জহুর ধোপা’, ‘নছর পেয়াদা’( মানুষ ),‘সোনার হরফে লেখা নাম’, ‘মায়ের বুলি’, ‘ইস্তাম্বুল যাত্রীর পত্র’, ‘নয়াচীনে এক চক্কর’, ‘বউ বেগম’, ‘তুর্কী উপকথা’, ‘লিপি সংলাপ’, ‘মটরগাড়ির প্রথমযুগ’, ‘কাফেলা’, ‘আনোয়ার পাশা’, ‘কামাল পাশা’, ‘হীরক হার’, ….।
তাঁর অন্য সকল কৃতিত্ত্বকেও ছাপিয়ে যায় ছোটো গল্পের সম্ভার৷৷পুটু,নফর পেয়াদা,ভাঙাকুলা…অসংখ্য৷এই সব গল্প আজও পাঠ্য আছে কিনা জানা নেই!বারবার মনে পড়ে পঠিত-সাহিত্যের সেই সব মণিময় রত্নের কথা!যে একবার পড়েছে,তার পক্ষ সেই স্বাদ ভুলে থাকা অসম্ভব৷
অনুরাগী আর সাহার্যপ্রার্থীদের ভিড়ে অতিষ্ঠ অথচ বিনয়ী মানুষটি হতে পারতেন না অভদ্র-তাই দেওয়ালে লিখে রেখেছিলেন –
“অল্প কথায় কাজ সেরে বিদায় হন যিনি,
তাঁকে অনেক ধন্যবাদ,কাজের লোক তিনি৷”
সাহায্য চেয়ে খালি হাতে কেউ ফিরত না৷সাথে রাখতেন গুচ্ছের মনি অর্ডার ফর্ম৷মাসের প্রথমেই নিজের সুন্দর হাতের লেখায় ঠিকানা লিখতেন প্রাপকদের৷কী জানি,হয়ত যাঁদের সাহায্য করতেন-তাঁদের জন্যে সাক্ষী রাখতে চাইতেন না৷ঐ যে “ডান হাতে দেবে ,বাম হাতও না জানে” নীতির বিশ্বাসীতো এমন সব ক্ষণজন্মারাই!
বৃদ্ধ বয়সেও নাকি মানুষটি গ্রামে গ্রামে ঘুরতেন স্কুল -কলেজের মঞ্জুরী আর শিক্ষকদের বেতন চালু করার দায়িত্ব নিয়ে৷অনুরোধ করতেন-
“আপনারে দীপ করি জ্বালো,
আপনার যাত্রাপথে আপনিই দিতে হবে আলো।
“”পড়াশুনা কর,স্কুলে পড়!
হারিয়ে গেছেন এইসব মানবেরা!
আবার যদি তাঁদের খুঁজে পাওয়া যেত!
(সংগৃহীত)